SLL: 10 পলাতক ব্যক্তির সম্পত্তি ক্রোকঃ (ধারা -৮৮)

বাংলাদেশের আইন অনুযায়ী কোন ব্যক্তির নামে যদি হুলিয়া জারি হয়ে থাকে এবং সে গ্রেফতার এড়াতে পলাতক থাকে তাহলে আদালত মাঝে মাঝে হুলিয়া জারিকৃত ব্যক্তির সম্পদ ক্রোক করার অনুরোধ করেন। পলাতক আসামীর যে উপায়ে সম্পদ ক্রোক করে থাকেন তা নিম্নে উল্লেখিত হলো-
(১) ৮৭ ধারা অনুসারে হুলিয়া প্রদানকারী আদালত যে কোন সময়ই হুলিয়াধীন ব্যক্তির অস্থাবর বা স্থাবর উভয় প্রকারের যে কোন সম্পত্তি ক্রোক করার আদেশ দিতে পারবেন।
(২) এরূপ আদেশ দ্বারা যে জেলায় আদেশ দেয়া হবে সেই জেলার মধ্যে অবস্থিত উক্ত ব্যক্তির যে কোন সম্পত্তি ক্রোক করা যাবে; এবং উক্ত জেলার বাইরে অন্য কোন জেলার উক্ত ব্যক্তির সম্পত্তি থাকলে তথাকার চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট বা চীফ মেট্রোপলিটন মজিষ্ট্রেটের পৃষ্টাঙ্কন দ্বারা একই আদেশে ক্রোক করা যাবে।
(৩) যে সম্পত্তি ক্রোক করার আদেশ দেয়া হয়েছে তার ঋণ অথবা অন্যান্য অস্থাবর সম্পত্তি হলে এই ধারা মোতাবেক তা নিম্নলিখিতভাবে ক্রোক করতে হবে-
ক) আটক করে; অথবা
খ) রিসিভার নিয়োগ করে, অথবা
গ) লিখিত আদেশ দ্বারা হুলিয়াধীন ব্যক্তিকে অথবা তার পক্ষে অন্য কোন ব্যক্তিকে উক্ত সম্পত্তি প্রদান নিষিদ্ধ করে; অথবা
ঘ) আদালতের ইচ্ছানুসারে এরূপ সমস্ত ব্যবস্থা অথবা যে কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করিয়।
(৪) ক্রোকের আদেশকৃত সম্পত্তি স্থাবর হলে এবং এই ধারার অধীন সরকারকে রাজস্ব প্রদানকারী জমি হলে যে জেলায় অবস্থিত সেই জেলার কালেক্টরের মারফত ক্রোক করতে হবে এবং অন্যান্য সমস্ত ক্ষেত্রে নিম্নলিখিতভাবে ক্রোক করতে হবে-
ঙ) দখল নিয়ে; অথবা
চ) রিসিভার নিয়োগ করে;
ছ) লিখিত আদেশ দ্বারা হুলিয়াধীন ব্যক্তি অথবা তার পক্ষে অন্য কোন ব্যক্তিকে খাজনা প্রদান করে অথবা সম্পত্তি হস্তান্তর নিষিদ্ধ অথবা
জ) আদালতের ইচ্ছানুসারে এরূপ সমস্ত ব্যবস্থা অথবা যেকোন দুইটি ব্যবস্থা গ্রহণ করে।
(৫) ক্রোকের আদেশকৃত সম্পত্তি যদি প্রাণী সম্পদ হয় অথবা পচনশীল প্রকৃতির হয় তাহলে আদালত প্রয়োজন মনে করলে অবিলম্বে উহা চিনে আদেশ দিতে পারবেন এরূপ ক্ষেত্রে বিক্রয় লব্ধ অর্থ আদালতের আদেশানুসারে ব্যবহৃত হবে।
(৬) এই ধারার অধীন নিযুক্ত রিসিভারের ক্ষমতা কর্তব্য ও দায়িত্ব ১৯০৮ সালের দেওয়ানী কার্যবিধির প্রথম তফসিলের ৪০ আদেশ অনুসারে নিযুক্ত রিসিভারের ক্ষমতা কর্তব্য ও দায়িত্বের অনুরূপ হবে।
(৬ক) এই ধারা অনুসারে ক্রোকের তারিখ হতে ছয়মাসের মধ্যে হুলিয়াধীন ব্যক্তি ব্যতিত অন্য কোন ব্যক্তি যদি বাড়িতে ক্রোককৃত কোন সম্পত্তি দাবী করে অথবা ক্রোকের বিরুদ্ধে এরূপ দাবী উথাপন করে যে উক্ত সম্পত্তিতে তার স্বত্ব আছে এবং উক্ত স্বত্ব এই ধারা অনুসারে ক্রোকযোগ্য নহে তাহলে অনুরূপ দাবী বা আপত্তি সম্পর্কে দতন্ত করতে হবে এবং তা সম্পূর্ণ বা আংশিক মেনে নেয়া বা অগ্রাহ্য করা যেতে পারে।
তবে শর্ত এই যে এই উপ ধারায় বর্ণিত সময়ের মধ্যে কোন দাবী বা আপত্তি করা হয়ে থাকলে দাবী বা আপত্তিকারীর মৃত্যুর পর তাদের আইনসংগত প্রতিনিধি উক্ত দাবী বা আপত্তি পরিচালনা করতে পারবেন।
(৬খ) যে আদালত ক্রোকের আদেশ দিয়াছেন (৬ক) উপধারা অনুসারে দাবী বা আপত্তি সেই আদালতে করতে হবে এবং (২) উপধারা অনুসারে চীফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিষ্ট্রেট বা চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেটের পৃষ্ঠান্ধনকৃত আদেশক্রমে ক্রোককৃত সম্পত্তির দাবী বা আপত্তি উক্ত ম্যাজিষ্ট্রেটের আদালতে করতে হবে।
(৬গ) হুলিয়াধীন প্রত্যেকটি দাবী বা আপত্তি যে আদালতে করা হয়েছে সেই বিষয়ে তদন্ত করবেনঃ
তবে শর্ত এই যে, দাবী বা আপত্তি চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট বা চীফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিষ্ট্রেট আদালতে করা হয়ে থাকলে তিনি উহা নিস্পত্তির জন্য তার অধীনস্থ প্রথম বা দ্বিতীয় শ্রেণীর ম্যাজিষ্ট্রেট বা মেট্রোপলিটন ম্যাজিষ্ট্রেটের উপর অর্পণ করতে পারবেন।
(৬ঘ) যার দাবী বা আপত্তি (৬ক) উপধারার অধীন প্রদত্ত আদেশ দ্বারা সম্পূর্ণ বা আংশিক অগ্রাহ্য করা হয়েছে তিনি বিরোধীয় সম্পত্তিতে তার দাবীকৃত অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য উক্ত আদেশের তারিখ হতে এক বৎসরের মধ্যে মামলা দায়ের করতে পারবেন কিন্তু এই মামলার ফলাফলের শর্তে উক্ত আদেশ চূড়ান্ত বলে গণ্য হবে।
(৬ঙ) হুলিয়াধীন ব্যক্তি যদি হুলিয়ায় উল্লেখিত সময়ের মধ্যে হাজির হয় তাহলে আদালত আদেশ দ্বারা সংশ্লিষ্ট সম্পত্তি ক্রোক হতে মুক্ত করে দিবেন।
(৭) হুলিয়াধীন ব্যক্তি যদি হুলিয়াকে উল্লেখিত সময়ের মধ্যে হাজির না হয় তাহলে ক্রোককৃত সম্পত্তি সরকারের হেফাজতভুক্ত হবে কিন্তু সম্পত্তি যদি দ্রুত ও স্বাভাবিকভাবে ধ্বংসশীল হয় অথবা আদালত যদি মনে করেন কে মালিকের পক্ষে বিক্রয় করা লাভজনক হবে তাহলে আদালত যখন উপযুক্ত মনে করবেন তখন উহা বিক্রয়ের ব্যবস্থা করতে পারবেন।

Go to home page